মঙ্গলবার, ২৯ মে, ২০১৮

সিন্ধু সভ্যতা


আজ থেকে প্রায় সাড়েচার হাজার বছর পূর্বে ভারতীয় উপমহাদেশে  সিন্ধু অববাহিকা অঞ্চল জুরে এক সুপ্রাচীন            
সভ্যতার উদয় ঘটে, যা ইতিহাসে সিন্ধু সভ্যতা নামে পরিচিত । বর্তমানে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পশ্চিমদিকের রাজ্যগুলি, দক্ষিণ- পূর্ব আফগানিস্তান এবং ইরানের বালচিস্তান প্রদেশের পূর্ব

অংশ এই সভ্যতার অন্তর্গত ছিল ।

সিন্ধু সভ্যতা বা হড়প্প সভ্যতা সম্পর্কে কিছু গুরুত্ত পূর্ণ তথ্য 

  1. ১৮৪২ সালে চার্লস ম্যাসণ তার '' ন্যারেটিভস অফ ভেরিয়াস জার্নিস ইন বালচিস্তান, আফগানিস্তান অ্যান্ড ভ্য পাঞ্জাব '' গ্রন্থে হরপ্পার ধংসাবশেষের কথা প্রথম উল্লেখ করেন  ।                                                                                                                             
  2. ১৯২১-১৯২২ সালে স্যার জন মার্শাল, রায়বাহাদুর দয়ারাম সাহানি হরপ্পা এবং রাখালদাস বন্ধোপাধ্যায়, E. J.H. ম্যাককি ও স্যার জন মার্শাল মহেঞ্জোদারো আবিষ্কার করেন ।
  3. হরপ্পা সভ্যতা আনুমানিক ৩৩০০ খ্রিষ্টপূর্ব থেকে ১৭০০ খ্রিষ্টপূর্ব পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল বলে ধরা হয় ।

নগর পরিকল্পনা 

  1. সিন্ধু সভ্যতা বা হরপ্পা সভ্যতা ছিল একটি ব্রোঞ্জ যুগীয় নগরকেন্দ্রিক সভ্যতা ।
  2. হরপ্পাতে রাস্তা এর নিদর্শন পাওয়া যায় । হরপ্পার রাস্তা ছিল ৯ থেকে ৩৪ ফুট পর্যন্ত চওড়া । রাস্তা গুলি ছিল চুন সুরকি পাথর ও পোরা ইট দিয়ে তৈরি ।রাতে আলোর জন্য রাস্তার পাসে ল্যাম্প পোস্টের ব্যবস্থা ছিল ।                                                                     

  3. আগুনে পোরানো বা রোদে শুকানো এই দু ধরনের ইট দিয়েই ঘর বাড়ি তৈরি করা হত ।
  4. হরপ্পা সভ্যতার পয়ঃ প্রণালী ব্যবস্থা ছিল খুবই আধুনিক । জল নিকাশের জন্য রাস্তার নিচ দিয়ে ঢাকনা দেওয়া নর্দমা থাকত ও বাড়ির ছোট নর্দমা গুলি এই বড় নর্দমায় যুক্ত ছিল ।
  5. মহেঞ্জোদারোয় এক বিশাল স্নানাগারের অস্তিত্ব মিলেছে । এর আয়তন ১৮০ ফুট লম্বা ও চওড়া ১০৮ ফুট । এর চারদিকে ৮ ফুট উচু ইটের দেওয়াল ছিল । স্নানাগারটিতে জল সরবরাহ ও জল নিকাশি ব্যবস্থার মাধ্যমে ম্যলা জল বের ক্রার ব্যবস্থা ছিল । 
  6. সিন্ধু উপত্যকা জুড়ে তামা, ব্রোঞ্জ, এবং পোরা মাটির তৈরি প্রায় ২০০০ টি সিলমোহর আবিষ্কৃত হয়েছে । এই সিল গুলির ওপর এক ধরনের চিত্রলিপি খোদিত ছিল যা এখনও পাঠধার করা যায়নি ।

জীবিকা ও সমাজ জিবন 

  1. হরপ্পা অধিবাসীদের প্রধান জীবিকা কৃষি কাজ । উৎপাদিত ফসল ছিল গম, যব, তিল, মটর, রাই ইত্যাদি ।
  2. হরপ্পায় ৬ টি বৃহৎ শস্যাগারের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে ।
  3. হরপ্পার অধিবাসীরা সুতি ও পশমের পোশাক পড়ত । তারা সাধারণত দুতি বস্ত্র খণ্ড পোশাক হিসাবে ব্যবহার করত ।
  4. নারী পুরুষ উভয়ই ধাতুর তৈরি অলংকার পড়ত ।                                                                                                                                               

  5. মৃতদেহের সাথে তার ব্যবহার্য বিভিন্ন সামগ্রি দিয়ে সমাধি দেওয়া হত । আবার মৃতদেহ পোড়ালে তার ভস্ম একটি পাত্রে ভরে পাত্রটি সমাধি করা হত ।
  6. হরপ্পা সভ্যতার কেন্দ্র থেকে অসংখ্য নারী মূর্তি আবিষ্কৃত হওয়ায় মনেকরা হয় এখানে মাতৃদেবীর পুজা খুব জনপ্রিয় ছিল ।
  7. হরপ্পা এর সাথে এসময় আফগানিস্থান, ইরান, মেসোপটেমিয়া, মিশর ইত্যদি দেশের সাথে নিবির যোগাযোগ ছিল ।

পতনের কারন

হরপ্পা সভ্যতার পতনের পেছনে ঐতিহাসিকরা কয়েকটি কারন দেখিয়েছেন , সেগুলি হল-
  1. ভূ- প্রকৃতি পরিবর্তন
  2. ভূমিকম্প
  3. বন্যা
  4. সিন্ধু নদের গতি পরিবর্তন
  5. বনাঞ্চল ধ্বংস 
  6. বৈদেশিক আক্রমণ 



















নতুন লেখা

MOC Test Set - 19

Translate